পঞ্চগড়ে কমলা ও চা চাষের সাফল্যের পর নতুন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে আরও একটি পুষ্টি ও ঔষুধি গুণ সমৃদ্ধ ফলের চাষাবাদ। বিদেশী ফল ড্রাগন এখন পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত হচ্ছে। অনেকে শখের বসে বাড়ির আশে পাশে সামান্য জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়ে এখন বাণিজ্যিক আকারে চাষ শুরু করেছেন।
করোনা সংকটকালে চলতি মৌসুমে ড্রাগনের বাগানগুলোতে প্রচুর ফল হয়েছে। জেলায় অপরিচিত এই ফলের চাষ শুরু হওয়ায় অনেকে আগ্রহী হয়ে দেখতে যাচ্ছেন ড্রাগন ফলের বাগান।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার নয়াদীঘি এলাকার সৌখিন কৃষক মো. রাশেদ প্রধান। ৫৪ শতক জমির উপর ২০১৮ সালে পরীক্ষামূলক ভাবে ড্রাগন চাষ শুরু করেন তিনি। সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ঔষুধি গুণ থাকায় এ ফলের দেশে চাহিদা অনেক বেড়ে যাওয়ায় শুরুতেই সাফল্য পেয়ে যান।
তার এই সাফল্যে জেলার সৌখিন কৃষকেরা এখন পুরোনো কৃষি উৎপাদন বাদ দিয়ে ড্রাগন চাষে মনোযোগ দিচ্ছেন। গতানুগতিক কৃষি ব্যবস্থা থেকে ড্রাগন চাষে লাভ বেশি হওয়ায় তারা ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
কৃষি বিভাগ বলছে, পঞ্চগড় জেলার মাটি ড্রাগ, চাষের উপযোগী। ধান এবং অন্যান্য আবাদের চেয়ে ড্রাগন ফল চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন বেশি। এক একর জমিতে ড্রাগন চাষ করলে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা আয় হয়। অন্য আবাদে এমন লাভ হয় না।
কৃষক রাশেদ প্রধানের পরীক্ষামূলক ড্রাগণ চাষ জেলার অন্য কৃষকদের প্রেরণা হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, একান্তই শখের বসে বাগান করেছিলাম। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
এখন দেশের নানা প্রান্ত থেকে ড্রাগন ফলের ব্যবসায়িরা এসে ফল নিয়ে যায়।
মারেয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামিম আহমেদ জানান, শখের বসে আমিও ড্রাগন চাষ করেছিলাম। এই ফলের বাণিজ্যিক লাভ অনেক বেশি। তাই বর্তমানে বাণিজ্যিক আকারে চাষাবাদ শুরু করেছি।
তবে উদ্যোক্তারা জানান, গত মৌসুমে লাভ হলেও এ মৌসুমে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ফল বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।
পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল মতিন জানান, আয় বৃদ্ধি ও পুষ্টির চাহিদা পূরনের জন্য এই জেলার চাষিদেরকে ড্রাগণ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে তদারকি এবং এর চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।